করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে বিশ্ব আজ স্থবির। করোনা বর্তমান সময়ে একটি আতংকের নাম। অণুজীব বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম। ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কুল কিনারা নেই। পৃথিবীর সব শক্তি যেন আজ পরাজিত।
যতটুকু চেষ্টা করার সামর্থ্য আছে সেটাও ঘরে বসে করতে হবে। সকল কর্মকান্ড আজ স্তব্ধ। অন্যান্য বিষয়ের সাথে স্থবির শিক্ষাব্যবস্থা। ইউনেস্কো সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী করোনার প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীর ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত।
করোনা প্রাদুর্ভাবে কারনে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আজ সংকটাপন্ন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় মিলে আমাদের প্রায় পৌনে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী। চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ নিচ্ছে বিশ্রাম।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শিক্ষার্থীদের কোলাহল। আমরা খুবই দূর্দিন পার করছি। রবিঠাকুরের ভাষায়, “মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে । পৃথিবী কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়। এই দুর্যোগও আমরা শিগগিরই কাটিয়ে উঠব।
প্রিয়, শিক্ষার্থীরা করোনা তোমাদের প্রিয় সহপাঠী আর শিক্ষকদের সহচর্য থেকে তোমরা অবস্থান করছে দূরে, তাতে কী?
শোন, তোমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন অভিবাবকরা সারাক্ষণই তোমাদের পাশে আছেন।তোমাদের সাথে আছে তোমাদের প্রিয় নিত্যসাথী বই, তাই নয় কি? সংসদ টিভিতেও ক্লাস হচ্ছে।এছাড়াও তোমাদের ইউটিউবে শিক্ষামূলক অনেক চ্যানেল পাবে তোমরা কিশোর বাতায়ন ক্লাস করতে পারো।
দীর্ঘ বিরতি এই সময় শিক্ষার্থীদের অলস সময় কাটানোর কোন সুযোগ নেই। কেননা পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদেরকেই থেমে যাওয়া এই দেশ ও জাতিকে গতিময় করতে হবে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার।নিজেদের কে ছাত্র পরিচয় দিয়ে ঘরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছো, ঠিক যেন ঘড়িতে লেগে থাকা চার্জহীন ব্যাটারি মতো। মনে রাখতে হবে ঘড়ির কাঁটা থেমে থাকলেও সময়টা কিন্তু থেমে নেই।
করোনাকালে শিক্ষার্থীরা যা করতে পারেঃ
শিক্ষার্থীরা অনেক দৈনন্দিন রুটিন ঠিকঠাকমতো পালন না করায় অন্য বন্ধুদের থেকে বিভিন্নভাবে পিছিয়ে আছে। এই সময়টাই হতে পারে বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার সময়। প্রিয় শিক্ষার্থীরা খেয়াল, করোনায় এখন তোমাদের স্কুল নাই, কোচিং নাই, টিচারের কাছে অতিরিক্ত পড়ার ঝামেলা নেই। তোমাদের প্রথম কাজ হলো তুমি কোন বিষয়ে দুর্বল আছো, এটা একটি তালিকা তৈরি করা। এবং পাঠ্যবই নিয়ে ডুবে যাওয়া বইয়ের মধ্যে। অভ্যাস করো পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি লাইন পড়া। বুঝে পড়ার চেষ্টা করো, পড়ার সাথে লিখে ফেলো। ভালো করা গোপন কৌশল হলো পড়ার সাথেই লিখা।
তবে খবরদার! বাইরে রাস্তায় কিংবা খেলার মাঠে খেলতে যাওয়া যাবেনা। মা-বাবার কথার অবাধ্য হওয়া যাবে না। নিজের স্বাস্থ্য দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে সবসময়। কারণ অসুস্থ হলে পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটবে।দৃঢ় মনোবল দিয়ে করোনাভাইরাস আমাদের পরস্পরকে যতই দূরে ঠেলে দিক না কেন, মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে দ্রুত আমরা এই মহা বিপদ থেকে মুক্তি পাবে ইনশাল্লাহ।
তোমাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিরাপদে থাকো, ভালো থাকো এই কামনাই করছি।
লেখকঃফারুক হোসেন অভি
(প্রাক্তন শিক্ষক, বাঘৈর হাই স্কুল,
এলএল.বি.আই.পি, এফ.এল.টি.সি,জর্জ কোর্ট,ঢাকা)